Search This Blog

Sunday 28 July 2013

মুভি রিভিউঃ ম্যান ইন ব্ল্যাক-৩

একটা সিক্যুয়েল মুভি দেখতে গেলে দ্বিমুখী সমস্যায় পড়তে হয়।  প্রথমতঃ আগের পর্বগুলো দেখা না থাকলে মুভির আসল মজা ভাল ভাবে পাওয়া যায় না। দ্বিতীয়তঃ আগের পর্বগুলো দেখা থাকলে শুরু হয় অন্য সমস্যা। তখন আগের পর্বের সাথে এই মুভির নানারকম তুলনা মাথায় গিজগিজ করে। এই ছবিটা আগের ছবিকে ছাড়িয়ে যেতে পারল কি না, অভিনয় আগের ছবির চেয়ে ভাল না খারাপ ইত্যাদি ইত্যাদি। ম্যান ইন ব্ল্যাক -৩ অনেক ক্ষেত্রেই তার আগের পর্বগুলোকে ছাড়িয়ে যেতে পারে নি ঠিকই, তবে সময়োপযোগী রুপান্তরের মাধ্যমে একটা চালু ফ্রাঞ্চাইজ হিসাবে টিকে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ যোগাড় করে ফেলেছে।

ম্যান ইন ব্ল্যাক সিরিজের তৃতীয় এই মুভিটির আই এম ডি বি রেটিং ৭.০ আর রোটেন টমেটো রেটিং ৬৯%।

কাহিনী সংক্ষেপঃ আমাদের পরিচিত এজেন্ট কে (টমি লি জোন্স) আর এজেন্ট জে (উইল স্মিথ)কে দিয়ে শুরু হয় কাহিনী। এলিয়েন আক্রমন থেকে পৃথিবীকে বাচাতে সদা তৎপর এই দুই এজেন্টের সামনে এবার মুখোমুখী পুরোনো শত্রু "জানোয়ার বরিস" যাকে ৪০ বছর পুর্বে এজেন্ট 'কে' গ্রেফতার করে চাঁদে অবস্থিত সর্বোচ্চ নিরাপত্তার 'লুনার ম্যাক্স' কারাগারে কয়েদ করে রেখেছিল। 'লুনার ম্যাক্স' থেকে পালিয়ে "জানোয়ার বরিস" পৃথিবীতে এসেছে পৃথিবী ও পুরোনো শত্রু এজেন্ট 'কে' কে ধ্বংস করতে। টাইম জাম্পের মাধ্যমে "জানোয়ার বরিস" অতীতে ফিরে গিয়ে খুন করে এজেন্ট 'কে' কে। এখন পৃথিবী আর এজেন্ট 'কে' কে বাচাতে এজেন্ট 'জে' অতীতে  যায়। সেখানে এজেন্ট 'জে'র দেখা হয় কমবয়সী এজেন্ট 'কে' ( যোশ ব্রোলিন ) এর সাথে। দুজনে মিলে পৃথিবীকে বাচানোর মিশনে নামে।

অনেকদিন পর আমার প্রিয় একজন অভিনেতা উইল স্মিথকে অভিনয়ে দেখে অনেক ভাল লেগেছে। অসাধারন অভিনয় করেছেন। টমি লি জোন্স কে দেখে একটু দুঃখ পেয়েছি। ভদ্রলোক আসলেই বুড়িয়ে গেছেন, যদিও তার বয়সী নায়কেরা এখনও একশন ফিল্ম করে যাচ্ছেন। কমবয়সী এজেন্ট 'কে' এর চরিত্রে যোশ ব্রোলিন অসাধারন অভিনয় করেছেন। মনে হচ্ছিল টমি লি জোন্সই বোধহয় তরুন হয়ে গেছেন। যোশ ব্রোলিন টমি লি জোন্স কে অনুকরন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

দুই এজেন্টের চরিত্রের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া ছিল। তাদের খুনসুটি, আবেগাক্রান্ত মুহুর্তগুলো খুব উপভোগ করেছি। সিনেমার শেষ দিকে একটা চমক আছে। তাছাড়া মানুষের চাঁদে যাওয়ার মুহুর্তটাকে আবার বিশ্বাসযোগ্যভাবে পুনঃনির্মান করে দেখানোর জন্য পরিচালককে একটা ধন্যবাদ দিতেই হয়।

"জানোয়ার বরিস" চরিত্রে জেমেইন ক্লেমেন্ট সাদামাটা অভিনয় করেছেন। তাকে কখনোই সুপার ভিলেন মনে হয় নি । ভবিষ্যত দেখতে পারা গ্রিফিন (জেমেইন ক্লেমেন্ট) যথেষ্ট হাস্যরস জুগিয়েছে। সিনেমার একটি দৃশ্যে হাসতে হাসতে আমার পেটে খিল ধরে গিয়েছিল, যখন 'টাইম জাম্প' করার জন্য এজেন্ট জে কে এম্পায়ার  স্টেট বিল্ডিং থেকে ঝাপ দিতে বলা হল।

বুড়িয়ে যাওয়া টমি লি জোন্স কে বাদ দিয়ে নতুন এজেন্ট 'কে' আসায় নতুন করে শুরু হল এই জনপ্রিয় সিরিজের যাত্রা। এই পরিবর্তন আপনার ভাল লাগে কি না, বুঝার জন্য মুভিটি দেখে ফেলুন ঝটপট।

সবশেষে, সিনেমার একটি ডায়লগ, যেটি আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে, রিভিউর সাথে অপ্রাসঙ্গিক হলেও বলতে ইচ্ছা করছে, ডায়লগটি হল, "যে প্রশ্নের উত্তর তুমি জানতে চাও না, সে প্রশ্ন কখনো করো না"।

সবাই ভাল থাকবেন। হ্যাপি মুভি টাইম।

No comments:

Post a Comment